শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন

রোহিঙ্গা শিশুদের সাহাযার্থে লন্ডনে চিত্র প্রদর্শনী

রোহিঙ্গা শিশুদের সাহাযার্থে লন্ডনে চিত্র প্রদর্শনী

স্বদেশ ডেস্ক: নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা সহায়তার জন্য চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে যুক্তরাজ্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। লন্ডনের হিউম্যান রাইটস অ্যাকশন সেন্টারে ‘হোয়েন আই গ্রো আপ’ নামের ওই চিত্র প্রদর্শনী ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে চলবে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত। ওই অনুষ্ঠানে শিক্ষাবঞ্চিত ওই শিশুদের অঙ্কন করা ১৩টি চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে।
যুক্তরাজ্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, যদি রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার অধিকারকে অব্যাহতভাবে অস্বীকার করা হয়, তাহলে তাদের ‘প্রজন্ম হারিয়ে যাওয়ার’ ঝুঁকি তৈরি হবে। বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা শিশু রয়েছে। আজ তাদের শিক্ষা সহায়তার জন্য তাদেরই অঙ্কিত চিত্র প্রদর্শনী হচ্ছে। বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের শিক্ষা সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশ হিসেবে আরও বেশি দায়িত্ব পালন করতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
যুক্তরাজ্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক কেইট অ্যালেন বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের জীবন থেমে আছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে পালিয়ে আসার পর থেকে তারা আর শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেনি। এই অবস্থায় তাদের প্রজন্ম হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং যুক্তরাজ্য সরকারেরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। কোনও শিশুকে স্বপ্ন দেখা থেকে বাধা দেওয়া উচিত নয়।’
চিত্র প্রদর্শনীতে নয় বছর বয়সী এক শিশুর চিত্র প্রদর্শিত হয়। তার স্বপ্ন একজন ইঞ্জিনিয়ার হওয়া। যাতে মিয়ানমার সেনা অভিযানের সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িগুলো পুনঃনির্মাণ করতে পারে। আরেক ১২ বছর বয়সী শিশু যে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখে, যাতে তার সম্প্রদায়কে শিক্ষিত করতে পারে। ওই প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হয় আরেক ১০ বছর বয়সী শিশুর আঁকা এক উড়োজাহাজের চিত্র, সে পাইলট হতে চায়। যাতে সে তার বাবার কাছে মালয়েশিয়ায় যেতে পারে, তিনি সেখানে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছেন।
বাংলাদেশে ওই শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ নেই। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে, তাদের বাবা-মার সঙ্গে সেখানে তারা থাকে। তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য কোনও কাউকে জবাবদিহি করা হয়নি। রোহিঙ্গাদের অধিকাংশ সবাই বলছে, একদিন তারা তাদের দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাবে। কেবল তখনই তারা ফিরে যাবে, যখন তাদের এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে, বৈষম্য ও বিচ্ছিন্নতার অত্যাচারী শর্তগুলি যখন তুলে নেওয়া হবে, তারা যখন নাগরিক হিসেবে তাদের অধিকার নিশ্চয়তা পাবে। কেইট অ্যালেন বলেন, শিক্ষা গ্রহণই রোহিঙ্গা শিশুদের ভবিষ্যৎ গঠন ও সম্প্রদায়কে সহায়তা করবে। কেবল শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার মাধ্যমে ওইগুলো অর্জিত হবে। তাদের মৌলিক মানবাধিকার অস্বীকারের মাধ্যমে আমরা তাদেরকে অপরাধীচক্র, মানব পাচারকারী, সশস্ত্র গ্রুপ ও অন্য যারা তাদের দুর্দশাকে কাজে লাগাতে চাইছে তাদের করুণার পাত্র করে রেখে চলেছি। যুক্তরাজ্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সমর্থকরা দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অলোক শর্মাকে চিঠি দিয়েছেন। এ চিঠিতে তারা রোহিঙ্গাসহ সব শিশুদের সর্বজনীন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা করতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কেইট বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যতদিন মিয়ানমারে নিরাপদে, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থায় ফিরে যেতে না পারে ততদিন ওই সম্প্রদায়ের লোকদের সহাবস্থান ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের সহায়তায় বাংলাদেশকে অবশ্যই সহায়তা করবে যুক্তরাজ্য।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877